Kanan Faysal : 26 October 2024
জীবনে কঠিন সময় আসতেই পারে এবং যখন আসে সেটা মোকাবেলা করার জন্যে প্রয়োজন হয় সান্ত্বনা এবং উৎসাহের । কখনো কখনো নিজের প্রতি সহানুভুতি , আন্তরিকতা আমাদেরকে কঠিন পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে সাহায্য করে, যাকে বলা হয় Self Compassion.
এটা একটি শক্তিশালী হাতিয়ার যেটি আমাদের মধ্যে সহনশীলতা এবং coping abilities তৈরি করে ।
তবে , এত উপকারিতা থাকা সত্ত্বেও অভ্যাস না থাকলে নিজের প্রতি সহানুভুতিশীল হওয়া অনেক সময় বেমানান বা কঠিন মনে হতে পারে । ছোট ছোট কিছু অভ্যাস নিয়মিত চর্চা করার মাধ্যমে খুব সহজেই self-compassion তৈরি করা সম্ভব ।
যেমনঃ -
✅জীবনের সংগ্রাম গুলোকে সহজেই স্বীকার করে নেয়া : যে কোন হার্ড টাইম বা খারাপ সময়কে খুব সহজেই স্বীকার করে সেগুলো মেনে নেওয়া কোন জাজমেন্ট বা বিচার করা ছাড়াই এবং নিজেই নিজেকে বলা যে , ‘ সময়টা খারাপ যাচ্ছে আসলেই এবং যে কারো জন্যেই এমন সময় মোকাবিলা করা কঠিন ।‘
✅ নিজের ইম্পারফেকশন গুলিকে মেনে নিয়ে গ্রহণ করা: মানুষ হিসেবে আমরা কেউই পারফেক্ট না - মেনে নেয়া এবং ছোট খাটো ভুলের জন্যে নিজেকে ক্রমাগত দোষা্রোপ করা থেকে বিরত থাকা । ভুল গুলির জন্য নিজের উপর হার্ড না হয়ে বরং সহানুভুতিশীল হওয়া এবং গ্রো করার জন্যে নিজের নার্চার বা যত্ন নেয়া । যেমনটা আমরা আমাদের কাছের মানুষের প্রতি করে থাকি ।
✅নিজের প্রশংসা করা : আমরা যখন লো ফিল করি সেই সময় গুলো স্বাভাবিক ভাবেই ডিল করা কষ্টকর । সেই সময়টাতে নিজের প্রতি সহানুভুতিশীল হওয়ার পাশাপাশি নিজেকে প্রশংসা করাও জরুরি । বোঝার সুবিধার্থে কয়েকটি উদাহরন দেখানো হলঃ
• সময়মতো অফিস/ ক্লাসে যাওয়ার জন্য আমি নিজেকে নিয়ে গর্বিত।
• মিটিং বা প্রেজেন্টশনে আমি উত্তেজিত হওয়া ছাড়াই অপ্রত্যাশিত পরিস্থিতি হ্যান্ডেল করেছি । GREAT JOB !
• I’m good at _
জীবনে অনেক কিছুই আমরা ঠিকঠাক ভাবে করে থাকি । তাই , নিশ্চিত করুন যে সেগুলো আপনি লক্ষ্য করছেন এবং নিজেকে ক্রেডিট দিচ্ছেন!
✅ বাউন্ডারি সেট করা : নিজেকে এবং অন্যদের ভালবাসার আরেকটি উপায় হল লাইফে বাউন্ডারি সেট করা । ফিজিক্যাল এবং মেন্টাল ক্ষত থেকে বাউন্ডারি আমাদের প্রটেক্ট করে রাখে । স্ট্রেস ম্যানেজ করাও এবং লাইফের প্রায়োরিটি সেট করাও সহজ হয়ে যায় । পাশাপাশি , ক্লিয়ার কমিনিউকেশন এর মাধ্যমে আমাদের একে অপরের সাথে সম্পর্ক গুলা আরও শক্তিশালী হয় ।
✅সেলফ ইম্প্রুভমেনটের জন্যে কাজ করা : স্বাস্থ্যকর অভ্যাস গড়ে তোলা (যেমন রাতে তাড়াতাড়ি ঘুমাতে যাওয়া , হেলদি খাওয়া দাওয়া করা ) । এছাড়াও সেলফ হেল্প বই পড়া , জার্নালিং সহ ইত্যাদি চর্চার মাধ্যমে এই অভ্যাস গুলি ধীরে ধীরে বিল্ড করার মাধ্যমে সেলফ ইম্প্রুভমেন্ট আনা সম্ভব ।
✅অনুভুতি গুলাকে সম্মান করা : অনুভুতি আমাদের মনের জানালা হিসেবে কাজ করে । আমরা কি চাই বুঝতে সাহায্য করে । যেমন রাগ আমাদের খুবই সাধারণ এবং অন্যান্য আবেগ গুলোর মতো রাগও মানুষের মৌলিক একটি আবেগ । কিন্তু আমরা যখন হুটহাট কোন বিষয়ে অল্পতেই রেগে যাই তখন খেয়াল করা উচিৎ যে কেন এমন হচ্ছে। অনুভুতি উপেক্ষা করে আমাদের যে মৌলিক চাহিদা রয়েছে সেগুলা অর্জন করা সম্ভব নয় । অতএব , সময় নিয়ে বসা এবং নিজের অনুভুতি গুলো লক্ষ্য করা এবং সেগুলার নাম করণ করা । এতে করে সহজেই আমাদের অনুভুতি গুলো কখন কেন হচ্ছে বুঝতে পারব ।
সবশেষে , self-compassion একটি স্কিল যেটা ধীরে ধীরে প্রাক্টিসের মাধ্যমে অর্জন করা যায়।